শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বিশ্বের কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীর সংখ্যা আসলে কত?

বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩
77 ভিউ
বিশ্বের কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীর সংখ্যা আসলে কত?

কক্সবাংলা ডটকম(২৯ নভেম্বর) :: বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সোয়া কোটি বাংলাদেশী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) যদিও বলছে, সংখ্যাটা ১ কোটি ৪৮ লাখের বেশি।

আবার সংসদে গত সেপ্টেম্বর এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ জানিয়েছিলেন, বিদেশে বাংলাদেশী কর্মী রয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ।

এর মধ্যে সে বিতর্ককে উসকে দিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২-এর ‘ন্যাশনাল রিপোর্ট’।

প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীর সংখ্যা ৫০ লাখ ৫৩ হাজার। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তথ্যে ব্যাপক পার্থক্য থাকায় প্রবাসীর সঠিক পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা গালফ রিসার্চ সেন্টারের এক প্রতিবেদন বলছে, কেবল সৌদি আরবের শ্রমবাজারেই ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১১ থেকে ২১ লাখ। সে হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে বিদেশী শ্রমিকের দিক দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। সৌদি আরবের পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছিল গালফ রিসার্চ সেন্টার।

বিবিএস গেল বছরের ১৫ থেকে ২১ জুন—এ এক সপ্তাহে দেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা করে। ওই সময় অর্থাৎ শুমারি চলাকালীন বাংলাদেশীদের যারা ছয় মাসের বেশি সময়ের জন্য বিদেশে ছিলেন তাদের প্রবাসী হিসেবে গণ্য করা হয়। সে অনুযায়ী প্রবাসীর সংখ্যা ৫০ লাখ ৫৩ হাজার বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ৪০ শতাংশই বা ২০ লাখই চট্টগ্রাম বিভাগের। আর রংপুর থেকে সবচেয়ে কম অর্থাৎ ১ লাখ ১৫ হাজার জন বিদেশে কর্মরত। শতাংশের হিসেবে যা কেবল ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত এসেছেন ৪ লাখ ৬৬ হাজার প্রবাসী, যাদের মধ্যে ১ লাখ ৫৪ হাজার বা ৩৩ শতাংশই চট্টগ্রামের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগের এক প্রতিবেদন যদিও বলছে, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী রয়েছেন ১ কোটি ২৫ লাখ। মূলত ব্যাংক থেকে প্রবাসীদের ঋণ নেয়ার প্রবণতা ও প্রভাব নিয়ে ২০১৯ সালে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিল।

অন্যদিকে বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে গেছেন ১ কোটি ৪৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৪৭ বাংলাদেশী। শুধু সৌদি আরবেই পাড়ি জমিয়েছেন ৫৩ লাখ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছেন ২৫ লাখ জন। যদিও সংস্থাটির কাছে প্রবাসীদের ফিরে আসার কোনো তথ্য নেই। এমনকি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় কিংবা দেশের অন্য কোনো সংস্থাই বিদেশ থেকে ফেরত আসাদের তথ্য সংরক্ষণ করে না।

বিবিএসের তথ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সরকারের এ সংস্থাটির জরিপ পদ্ধতি নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন থেকে যায়। ২০২২ সালে জনশুমারি ও গৃহগণনা যেটি করা হয়েছে, তাতে প্রশ্নপত্রটির সংক্ষিপ্ত এবং অনেকেরই তথ্য উঠে আসেনি। এ কারণে প্রবাসীর সংখ্যাটা কম হতে পারে। তাছাড়া ভুল সমন্বয়েও প্রবাসীদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এখানে ত্রুটি থাকতে পারে। অন্যদিকে বিএমইটির পরিসংখ্যানে দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের তথ্য না থাকায় সেটিও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রবাসীদের অনেকে দেশে ফিরে এসেছেন। কারো কারো মৃত্যু হয়েছে। তাই কর্মের জন্য বিদেশ যাওয়াদের পরিসংখ্যান দিয়ে প্রবাসীদের তথ্য নির্ধারণ করা যাবে না। আবার প্রবাসী নির্ণয়ে বিবিএসের শুমারির প্রশ্নমালায় দেশের বাইরে ছয় মাস অবস্থানের বিষয়টি থাকায় মূল সমস্যাটা হয়েছে। এ ক্যাটাগরিতে অনেকে হয়তো বাদ পড়ে গেছেন। আবার কনটেন্ট এররও থাকতে পারে। প্রশ্নপত্র ভালোভাবে সাজালে সঠিক বিষয়গুলো উঠে আসত হয়তো।’

অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরও মনে করছেন সংখ্যাটা আরেকটু বেশি হতে পারে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‌৫০ লাখ হয়তো সর্বনিম্ন সংখ্যা কিন্তু প্রকৃত সংখ্যাটা আরো বেশি হতে পারে, যেটা এখনো আমরা জানি না হয়তো।’

জাতীয় সংসদে ১২ সেপ্টেম্বর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দেশের প্রবাসী শ্রমিক এখন ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৬০ জন। তবে বিবিএসের তথ্য প্রকাশের পর গতকাল মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সংসদে দেয়া তার বক্তব্য ও বিবিএসের শুমারি তথ্যের বিস্তর পার্থক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে প্রবাসীদের তথ্যের সংখ্যাগত পার্থক্য নিয়ে বিবিএসের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দিপংকর রায় বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যারা ছয় মাসের বেশি সময়ের জন্য বিদেশে গেছেন তাদেরই কেবল অন্তর্ভুক্ত করেছি। অর্থাৎ শুমারি চলাকালীন দেশের ৫০ লাখ ৫৩ হাজার লোক দেশের বাইরে ছিলেন। কিন্তু যারা এ সময়ে ছুটি নিয়ে দেশে এসেছেন তারা প্রবাসী হিসেবে গণ্য হননি। তাদের খানার সদস্য হিসেবেই ধরা হয়েছে। আবার যারা পরিবারসহ বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন তারাও শুমারির সংজ্ঞার কারণে হিসাবে আসেননি। কারণ শুমারি হয় খানাভিত্তিক। খানা না থাকলে সে হিসাব আসার সুযোগ নেই।’

বিএমইটি বা অন্য সংস্থাগুলোর তথ্যের বিষয়ে ড. দিপংকর রায় বলেন, ‘‌তাদের পরিসংখ্যানে প্রবাসীদের ফিরে আসার তথ্য থাকে না। তাই তাদের পরিসংখ্যানের সঙ্গে এটা তুলনীয় নয়। কারণ তারা মোট গমনকারী যোগ করে হিসাব করে থাকে। এটাকে পিরিয়ড অব টাইম বলা হলেও আমরা করেছি পয়েন্ট অব টাইম। অর্থাৎ শুমারিকালীন যারা বিদেশে ছিলেন শুধু তারাই এ হিসাবে এসেছেন।’

বিবিএসের পক্ষ থেকে জনশুমারির শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল এবার প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের পূর্ণাঙ্গ তথ্য নিয়ে আসা হবে শুমারিতে। কিন্তু চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। এর মধ্যে প্রবাসীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়ায় বিষয়টি বিবিএসের সঙ্গে বসে পরিষ্কার করবেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘‌এখানে কিছু প্রশ্ন উঠেছে, বিষয়টি আমি ফলো করব।’

77 ভিউ

Posted ১:১১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com